বই নোট - ইসলামী দাওয়াত ও কর্মনীতি-সাইয়েদ আবুল আ’লা মওদূদী - আমার প্রিয় বাংলা বই

সাম্প্রতিকঃ

Post Top Ad

Responsive Ads Here

September 16, 2021

বই নোট - ইসলামী দাওয়াত ও কর্মনীতি-সাইয়েদ আবুল আ’লা মওদূদী

 


ইসলামী দাওয়াত ও কর্মনীতি

মূল নামঃ ইসলামী দাওয়াত আউর তরিকে কাম

লেখক- সাইয়েদ আবুল আলা মওদূদী

বইটির গুরুত্ব

§ বইটি নিরেট একটি সাংগঠনিক বই।

§ দায়ীদের উদ্দেশ্যে বইটি রচিত।

§ যারা দ্বীনকে জীবন উদ্দেশ্য হিসাবে গ্রহণ করতে প্রস্তুত তাদের উদ্দেশ্যে ।

§ ইসলামকে জীবনাদর্শ হিসাবে প্রতিষ্ঠাকারীদের জন্য বইটি গুরুত্বপূর্ণ।

§ এটি ১৯৪৫ সালের ১৯শে এপ্রিল দারুল ইসলাম পাঠান কোটে অনুষ্ঠিত জামায়াতে ইসলামীর বার্ষিক সম্মেলনে প্রদত্ত আমীরে জামায়াতের ভাষণ। 

ভুমিকায় ৩টি বিষয়ের আলোচনা

আমাদের দাওয়াতে হতাশার দিক

১. আমাদের আন্দোলন শুষ্ক, নীরস ও স্বাদহীন।

২. আমাদের দাওয়াত দুনিয়ার রাজনৈতিক বাজারে একটি অচল পণ্য।

৩. আমাদের কর্মনীতিতে আন্দোলনকে তীব্র ও জনগণকে আকৃষ্ট করতে বর্তমান কালের উপায় উপকরণ নেই।

আমাদের দাওয়াতে আশার দিক

১. ধীরে ধীরে বহু লোক আমাদের দাওয়াতে আকৃষ্ট হচ্ছে।

২. সম্মেলন সমুহে দূর-দুরান্ত থেকে লোকজন যোগদান করছে।

৩. এ সকল লোকদের আকর্ষণ নিশ্চিত সত্যের দিকে।

তৎকালীন রাজনৈতিক অবস্থা

§ মুসলিম লীগ” মুহাম্মদ আলী জিন্নাহর নেতৃত্বে ভারত বিভাগ করে পাকিস্তান কায়েমের আন্দোলন করে।

§ অপর দিকেকংগ্রেস” অখন্ড ভারত রক্ষার আন্দোলনে জোরালো ভুমিকা রাখে।

§ এ সময় জামায়াত রাজনৈতিক মিছিল-মিটিংএ যোগ না দিয়ে নীরবে দাওয়াত-সংগঠনের কাজে আত্মনিয়োগ করে।

সম্মেলনের উদ্দেশ্য

§ অতীতের কাজ যাচাই করাদোষ-ত্রুটিসমূহ অনুধাবন করা এবং তাহা দূর করবার জন্য চিন্তা করার অবসর লাভ করাই এই সম্মেলনের লক্ষ্য।     

ক. আমাদের সম্মেলন সমুহের উদ্দেশ্য হলো 

§ সদস্যগণের পরস্পর পরিচিতিসংঘবদ্ধ ও গভীরভাবে মিলিত হওয়া।

§ পারস্পরিক পরামর্শ ও সহযোগিতার উপায় উদ্ভাবন করা।

§ নিজেদের সাংগঠনিক কাজকে সামনের দিকে অগ্রসর করা।

§ বিপদসমস্যাবাধা-বিপত্তি সমুহ দূর করার পন্থা নির্ধারণ করা।

§ অতীত কাজের দোষ-ত্রুটি অনুধাবন ও তা দূর করতে চিন্তা করার অবসর লাভ।

§ সমর্থকদেরকে প্রত্যক্ষভাবে আমাদের দাওয়াত ও কাজ বুঝার সুযোগ করে দেয়া।

§ সত্য নীতি সম্পর্কে মনের ভ্রান্ত ধারণা দূর হলে তারা জামায়াতে যোগদান করবে।

খ. সাধারণ লোকেরা কেন সম্মেলনে আসে 

§ মুষ্টিমেয় কিছু লোক আল্লাহর নামে যে কাজ শুরু করেছেতা সুক্ষ দৃষ্টিতে যাচাই করার জন্য।

§ প্রকৃত পক্ষে মুষ্টিমেয় লোকদের কাজ আল্লাহর জন্য কিনা তা অনুসন্ধান করার জন্য।

আমাদের দাওয়াত

ক. দাওয়াতী কাজে অভিযোগ বা বাধা

§ দাওয়াত দিতে গেলেই বলা হয়আমরা ইসলামী রাষ্ট্র কায়েম করার দাওয়াত দিই।

§ আমাদের লক্ষ্য বুঝানো হয়-আমরা ক্ষমতা দখলের জন্য রাজনীতি করি।

§ আমাদেরকে পার্থিব স্বার্থবাদী আখ্যা দেয়া হয়।

খ. অভিযোগ কারীদের ধারণা

§ অথচ মুসলমানরা তো দ্বীন-ইসলাম ও পরকালের জন্যই কাজ করে।

§ হুকুমত দাবী করার বস্তু নয়ধার্মিক জীবন যাপনের কারণে আল্লাহর তরফ থেকে আসে।

গ. অভিযোগের কারণ ৩টি

§ প্রকৃত তত্ত্ব না বুঝার কারণে।

§ চালাকীর সাথে করেযাতে সাধারণ লোক সত্যের আন্দোলন/দাওয়াত থেকে বিরত থাকে

§ আলেম-পীরেরা কেন রাজনীতির দাওয়াত দেয় নাতারাই ইসলাম বেশী বুঝে (নিজ)

ঘ. আমাদের উদ্দেশ্য বা চুড়ান্ত লক্ষ্য

১. মানুষের সামগ্রিক জীবনে ইসলাম নির্ধারিত পরিপূর্ণ বিপ্লব সৃষ্টি করা।

২. নবী প্রেরণের উদ্দেশ্য-১টি মুসলিম জাতি গঠননবীদের কাজই এখন আমাদের।

ঙ. আমাদের দাওয়াত ৩টি দফাঃ

১. আল্লাহর দাসত্ব গ্রহণঃ সাধারণতঃ সকল মানুষকে বিশেষত মুসলমানদেকে আহবান জানাই।

২. মুনাফেকী ত্যাগঃ যারা মুসলমান হওয়ার দাবী করেতাদেরকে মুনাফেকী ও কর্মে বৈষম্য দূর করে ইসলামে পরিপূর্ণ প্রবেশের দাওয়াত দিয়ে থাকি।

৩. নেতৃত্বের আমুল পরিবর্তনঃ বাতিলফাসেকী ও কাফিরদের নেতৃত্বের আমুল পরিবর্তন করে নেতৃত্ব ও কর্তৃত্ব নেক বান্দাদের হাতে সোপর্দ করা।

চ. খোদার বন্দেগী সম্পর্কে কিছু লোকের ভ্রান্ত ধারণা

১. নিজকে বান্দা মনে করাই যথেষ্টনৈতিক-সমষ্টিগত জীবনে দাসত্ব না করলেও ক্ষতি নেই

২. আল্লাহকে প্রাকৃতিকভাবে সৃষ্টিকর্তারিযিকদাতা ও মাবুদ স্বীকার করতে হবে এবং বাস্তব জীবনে নেতৃত্ব ও কর্তৃত্ব থেকে আল্লাহকে অপসারিত করা অসংগত হবে না।

৩. ধর্মীয় জীবনে আকীদা-বিশ্বাসইবাদাতহালালহারামের কয়েকটি শর্ত মানাই বন্দেগী।

৪. বৈষয়িক ব্যাপারে খোদার বন্দেগী হতে সম্পূর্ণ মুক্ত। যেমন-তামাদ্দুনসমাজরাষ্ট্রঅর্থনীতি।

ছ. কাদের বিরুদ্ধে আমাদের সংগ্রাম

১. যতখানি কাফের জীবন ব্যবস্থার বিরুদ্ধে আমাদের লড়াই।

২. ততখানি তিব্রতার সাথে বন্দেগীর এই ভূল ধারণার বিরুদ্ধে আমাদের সংগ্রাম।

জ. কেন আমাদের সংগ্রাম উল্লেখিত ধারণা সমুহ দ্বীন ইসলামের মূল ভিত্তি ও রূপকে সম্পূর্ণ বিকৃত করে দিয়েছে।

মুনাফেকীর মুলকথা

ক. মুনাফেকীর নীতি ৪টি

১. ঈমান ও দ্বীনের সম্পূর্ণ বিপরীত জীবন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত দেখে সন্তুষ্ট হওয়া।

২. এর আমুল পরিবর্তন করে নিজের জীবন ব্যবস্থাকে প্রতিষ্ঠিত করতে চেষ্টা না করা।

৩. প্রতিষ্ঠিত জীবন ব্যবস্থা অনুকূল মনে করে তাথেকে নিজের ফায়দা হাসিলের চেষ্টা।

৪. কিছু লোক চেষ্টা করলেও তা আরেকটি ফাসেকী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্যে করে।

খ. খালেস-নিষ্ঠাপূর্ণ ঈমানের পরিচয়ঃ

§ যে জীবন ব্যবস্থার প্রতি ঈমান আনবেতা জীবন-বিধান ও আইন হিসাবে চালু করবে।

§ এই পথে যতই প্রতিবন্ধকতা আসুকআমাদের প্রাণ ব্যকুল ও কাতর হয়ে উঠবে।

§ প্রকৃত ঈমান তার বিকাশে সামান্যতম বাধা বরদাশত করবে না।

গ. সুস্পষ্ট ভ্রান্ত ধারণাঃ

১. কিছু দেশে ইসলামের কিছূ আইন-নীতি অক্ষতিকর মনে করে অনুগ্রহ করে চলতে দেয়।

২. সমগ্র জীবন দ্বীনের বিপরীত নিয়মে চলেএতে ঈমানের ক্ষতি হয় না বলে মনে করে।

৩. এমনকি সেখানে কুফুরী রাষ্ট্র ব্যবস্থাকে স্থায়ী নিয়তি মনে করা হয়।

ঘ. বান্দাকে মুনাফেকী হতে পবিত্র করাই আমাদের লক্ষ্য

১. খোদার বন্দেগীর সঠিক ধারণা অনুযায়ী নিষ্ঠার সাথে প্রচেষ্টা চালাব।

২. আল্লাহ প্রদত্ত জীবন পদ্ধতি পূর্ণ জীবনে অনুসরণ করব।

৩. জীবনের ক্ষুদ্র কাজেও বাতিলের প্রভাব বরদাশত করবো না।  

কর্মীর বৈসাদৃশ্যের তত্ত্বকথা

ক. কর্মীয় বৈসাদৃশ্য কাকে বলেঃ

১. কথা ও কাজের গরমিলকে বলে।

২. মুখে ঈমানের দাবী রেখে কাজে তার বিপরীত করাকে।

৩. বিভিন্ন নীতি অনুসরণ করাকে।

৪. বন্দেগীর বিপরীত কাজ করাকে।

খ. বৈসাদৃশ্যঅসামঞ্জস্যমুনাফেকীর ও বহুরুপী কাজের উদাহরণ

১. তাওহীদরেসালতআখেরাতশরীয়তকে মানার দাবী করে বৈষয়িক স্বার্থ লাভের জন্য বস্তুবাদীতাওহীদের বিপরীত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষা লাভ করার জন্য যাওয়া।

২. ঈমানের দাবী করে খোদার দুশমনদের রচিত আইনে স্থাপিত আদালতের বিচারের উপর নির্ভর করি।

৩. মসজিদে নামাজ আদায় ও বাইরে আল্লাহকে ভুলে গিয়ে নফসের অনুসরণ করি।

৪. একদিকে আল্লাহর নিকট প্রতিশ্রুতি প্রদানঅন্যদিকে স্বার্থ সংশ্লিষ্ট মুর্তির পুজা করা।

গ. দ্বীন সম্পর্কে বর্তমান মুসলমানদের অবস্থা

১. ঈমান ও ইসলামের স্বীকারোক্তিই যথেষ্ট হবে।

২. তাওহীদ-রেসালতের সাক্ষ্য ও নামাজ-রোজাসহ কয়েকটি ধর্মীয় অনুষ্ঠান পালনেই যথেষ্ট।

৩. বাস্তব জীবনে দ্বীন ও ঈমান বিরোধী কর্মনীতি অবলম্বন করলে ঈমানের কোন ক্ষতি নেই।

ঘ. যার ফলশ্রুতিতে ক্ষতি হচ্ছে

১. ফাসেকীকাফেরীপাপনাফরমানী ও যুলুমকে ইসলামের নামে চালিয়ে দেয়া হচ্ছে।

২. ঈমানের বিপরীতে মুসলমানরা সময়শ্রমযোগ্যতা ও জীবন বিলিয়ে দিচ্ছে-তা বুঝার জ্ঞানটুকু নেই। উদাহরণঃ লবনের খনিতে বিচ্ছিন্নভাবে যতলোক প্রবেশ করবে তারা লবনের সাথে মিশে যাবে।

ঙ. আমাদের আহবান

১. সম্পূর্ণ একমুখী নীতি-আদর্শের অনুসারী হয়ে দ্বীনের বিপরীত কাজ-কর্মের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করা।

২. ঈমানের দাবীকে গভীরভাবে উপলব্ধি ও তা পূরণ করার আহবান।

নেতৃত্বের মৌলিক পরিবর্তনের আবশ্যকথা

ক. ঈমানের দাবী / মুমীনের অনিবার্য দাবী- বর্তমান জীবন ও রাষ্ট্র ব্যবস্থায় বিপ্লব সৃষ্টি করা

১. যিনি নিজকে খোদার দাসত্বের নিকট সোপর্দ করেন।

২. জীবনে কোন প্রকার মুনাফেকী ও বৈসাদৃশ্যের ফাঁক না রাখেন।

৩. একনিষ্ঠ মুমীন হওয়ার চেষ্টা করেন-তার উপর।

খ. বর্তমান রাষ্ট্র ব্যবস্থার ভিত্তি কিসের উপর স্থাপিত 

§ কুফরীর উপর-পুজিবাদ বা বস্তুবাদ =আমেরিকা

§ নাস্তিকতার উপর-কমিউনিজম ও সেকুলারিজম =তুরষ্ক

§ শিরকের উপর-রাজতন্ত্র-সৌদি আরব =কুয়েত

§ ফাসেকীর উপর-জাতীয়তাবাদ

§ অসচ্চরিত্রতার উপর-গনতন্ত্র =বাংলাদেশ

গ. নেতৃত্বের মৌলিক পরিবর্তন কেন দরকারঃ এ কাজ না করলে ক্ষতি ৩টি

১. দুনিয়াতে খাঁটি মুসলমান হিসাবে জীবন যাপন করা সম্ভব নয়।

২. খোদার দাসত্বকে জীবনের আদর্শ হিসাবে গ্রহণ করা সম্ভব নয়।

৩. ভবিষ্যত বংশধরদের ইসলামের উপর বিশ্বাসী রাখা সম্ভব নয়।

ঘ. মুমীনের কর্তব্য

১. খোদার সন্তোষ অর্জন,

২. ধবংস ও বিপর্যয় থেকে সমাজকে রক্ষা,

৩. শান্তিনিরাপত্তা ও স্বস্তি প্রতিষ্ঠা।    এই লক্ষ্যে পৌছতে বাধাঃ- প্রতিষ্ঠিত অসৎ নেতৃত্ব।

ঙ. কেন বিশ্বে অশান্তি-যুলুম বৃদ্ধি পায়ঃ বিবেকের মতামত কি?

১. কারণঃ বিশ্বের নেতারা অসৎফাসেকফাজিরখোদাদ্রোহীশয়তানের দাসানুদাসগণ।

২. ফলাফলঃ যুলুমনির্যাতনঅশান্তিবিপর্যয় ও অত্যাচার বৃদ্ধি পাবে।

চ. মুসলমানের অপরিহার্য কাজঃ

১. পথভ্রষ্ট নেতৃত্ব খতম করা।

২. কুফর ও শিরকের প্রধান্য বিচুর্ণ করা।

৩. দ্বীন প্রতিষ্ঠার চেষ্টা সাধনা করা।

নেতৃত্ব পরিবর্তন কিরূপে হবে

ক. বিশ্ব পরিচালনার জন্য কি দরকার

১. যোগ্যতাঃ জ্ঞান-বিজ্ঞান

২. শক্তিঃ আধুনিক প্রযুক্তি সমুহ

৩. বৈশিষ্ট্যঃ মৌলিক মানবীয় গুণাবলী

খ. যাদের হাতে আল্লাহ নেতৃত্ব দেবেন তাদের গুণাবলী ৪টি

১. ঈমানঃ যাদের খাটি ঈমান আছে

২. সততাঃ যারা প্রকৃতভাবে সৎ

৩. মানবিক যোগ্যতাঃ যাদের দেশ পরিচালনার অপরিহার্য গুণাবলী আছে।

৪. শক্তিঃ যাদের শক্তি ও ক্ষমতা কাফেরদের চেয়ে বেশী আছে।-(নূর-৫৫নং)

গ. আমাদের উদ্দেশ্যঃ ২টি

১. দল গঠনঃ ঈমান ও সৎ লোকদের একটি দল গঠন করা। -আলে ইমরান-১০৩

২. সৎ নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠাঃ দুনিয়ার নেতৃত্ব কাফেরদের হাত থেকে সৎ ও ঈমানদারদের হাতে সোপর্দ করা তাওবা৩৩ফাতাহ-২৮সফ-৯

ঘ. আমাদের দাওয়াতের মুল আবেদনঃ

১. ঈমানদার ও সৎ লোকদের নিয়ে দল গঠন

২. নিষ্ঠাবান ইসলামের অনুসারী হওয়া

৩. তাদের ব্যক্তিগত ও সামষ্টিগত চরিত্র হবে পবিত্র ও পরিশুদ্ধ

৪. সমাজ ও রাষ্ট্র পরিচালনার সর্বোচ্চ  যোগ্যতার অধিকারী হবে

বিরুদ্ধতা ও উহার কারণ

ক. কাদের থেকে বিরোধীতা আসে

১. মুসলমানঃ সর্বপ্রথম দাওয়াতে বিরোধীতা আসে মুসলমানদের পক্ষ থেকে।

২. দ্বীনদারঃ আবার তাও মুসলমানদের মধ্যে যারা দ্বীনদার তারাই আগে বাধা দেয়।

৩. ইসলামী দলঃ তার মধ্যেও আবার বেশী তৎপর ধর্মপন্থী দলগুলো।     

খ. আমাদের দাওয়াত সম্পর্কে অমুসলিমদের মন্তব্য

১. অমুসলিমরা আজ পর্যন্ত বিরোধীতার জন্য সম্মুখে অগ্রসর হয় নাই।

২. ইসলাম সম্পর্কে একজন হিন্দুশিখ ও ইংরেজও সত্য নয় একথা বলে নাই।

৩. ইহার বিরোধীতা করার প্রয়োজনীয়তাও প্রকাশ করে নাই।

৪. তারা একথাও বলেছে-যদি দেশে ইসলামের দাওয়াত আগেই পেশ করা হত এবং মুসলমানরা যদি তা কায়েম করার চেষ্টা করতো তবে দেশের অবস্থা ভিন্নরূপ হত।

গ. বিরোধীতার ধরণ

১. আমাদেরকে কেউ সম্মুখ দিক থেকে আক্রমন করতে পারে না-

২. তাই তারা পিছন দিক থেকে বিভিন্নভাবে আক্রমন করে বলেঃ

ঘ. দাওয়াত ঠিক আছেতবে সমস্যা আছে-

১. দায়ীদের মধ্যে কিছু দোষ-ত্রুটি আছে।

২. এই কাজের জন্য সাহাবীদের মত লোক প্রয়োজন।

৩. এই যুগে এই দাওয়াত চলার মত নয়ইহা অচল মতবাদ।

৪. মুসলমানদের রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক অবস্থার কারণে এ দাওয়াত গ্রহণ করা যাবে না

ঙ. বিরোধীতাকারীদের পরিচয়

১. সর্ব প্রথমে যারা বাধা দিবে- পিতা-মাতা, আত্মীয় স্বজনবন্ধু বান্ধব।

২. ধার্মিক ও মুত্তাকীরা-যাদের কপালে সিজদার চিহ্ন পড়ে গেছে।

৩. যারা ২৪ ঘন্টা ধর্ম সংক্রান্ত আলোচনা করে তারাও বিরোধীতা করতে সংকোচ করে না।

৪. তাদের পুত্র-ভ্রাতা কিংবা আত্মীয়দের আন্দোলনে যোগদান আদৌ সহ্য করতে পারে না।

চ. বিরোধীতার পরিবর্র্তে পুষ্প ও প্রশংসা আসত যদি আমরা

১. দাওয়াতকে নিছক একটি জ্ঞান-গবেষণা মূলক আন্দোলন হিসাবে পেশ করতাম।

২. এই উদ্দেশ্য বাস্তবে প্রতিষ্ঠিত করতে লোকদের আহবান না জানাইতাম।

ছ. নবী-রাসুলদের আন্দোলনের বিরোধীতার কারণ

১. কবিসাহিত্যিক ও দার্শনিকদের বিরোধীতা করার কারণ ঃ

২. শিরকের ভিত্তিতে স্থাপিত জীবন/সমাজ ব্যবস্থাকে চূর্ণ করে খালিস তাওহীদের ভিত্তিতে  পরিপূর্ণ জীবন ব্যবস্থা হিসাবে পেশ করার কারণে তারা তা গ্রহণে প্রস্তুত ছিল না।

৩. বংশীয় প্রথা, আত্ম গৌরবআভিজাত্যপারিবারিক বৈশিষ্ট্য ত্যাগ করে তাওহীদের ভিত্তিতে জাতি গঠন করার আহবান জানানোর কারণে।

৪. অর্থনৈতিক ও পারিবারিক স্বার্থ-পরতা ও লোভ-লালসার প্রবৃত্তি ত্যাগ করে নৈতিক চরিত্রের মূলনীতি সমুহকে বাস্তব জীবনের ভিত্তি হিসাবে স্থাপিত করতে বলার কারণে। >> রাসুল (সা.) এই লক্ষ্যে একটি আন্দোলনের মাধ্যমে লোকদের সংঘবদ্ধ করে দেশের তাহযীব তামাদ্দুন ও নৈতিকতাকে আদর্শ দিয়ে পরিবর্তন করার চেষ্টা সাধনা করেছেন।

জ. বাতিল সমাজ ব্যবস্থার সাথে মুসলমানদের সমঝোতার ধরণ

১. মুসলমানরা বাতিল ব্যবস্থার সাথে সমঝোতার ফলে তাদের উপর বিরুধীতা আসে নাই।

২. এই সমঝোতায় বৈষয়িক ও ধর্মীয় সুযোগ সুবিধা ছিল।

৩. পরহেজগারীর ধুম পড়া লোক পযন্ত বাতিল সমঝোতার সাথে জড়িত।

৪. বাতিল মতবাদের অধীনে তাকওয়াইবাদাতসহ কয়েকটি অনুষ্ঠান পালনেই যথেষ্ট মনে করা।

৫. বহু আধ্যাত্মিক লোকের বাতিলের সাথে সমঝোতার ফলে আধ্যাতিœকতার মর্যাদা ক্ষুন্ন হয় নাই

৬. কুফরজাহেলিয়াতফাসেকী ও ভ্রান্ত আকীদার প্রতিবাদ ও ত্রুটি বর্ণনা করে মুখে সাহাবা যুগের মনোমুগ্ধকর চিত্র অংকন করা ইসলামের কর্তব্য পালনে যথেষ্ট মনে করা হয়েছে।

৭. আত্মীয়-স্বজন,আগামীদেরকে বাতিল সমাজের সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত রাখা সম্পূর্ণ হালাল

ঝ. আমাদের মারাত্মক অপরাধ কি/কেন বিরুধীতা করা হচ্ছে

১. বাতিলের সাথে সকল সুযোগ সুবিধা ত্যাগ করতে বলছি।

২. নিষ্ঠা ও আন্তরিকতার সাথে দ্বীনের অনুসরণ করতে আহবান জানাচ্ছি।

৩. সত্য প্রতিষ্ঠার জন্য জান-মালসময়-শ্রম উৎসর্গ করে চেষ্টা সাধনা করার আহবান জানাচ্ছি।

ঞ. আমাদের দাওয়াতকে সত্য বলে মেনে নেওয়া হলে তাকে যে কোন একটি পথ বেছে নিতে হবে-

১. স্বার্থের কুরবানী বরদাশত করে আন্দোলনে ঝাপিয়ে পড়তে হবে। অথবা

২. স্বীকার করার পর মনের দূর্বলতার দোহাই দিয়ে আন্দোলন থেকে দূরে সরে থাকতে হবে

ট. এই পথ অবলম্বন করা সহজ নয়ঃ কারণ-এতে

১. পরকালের গ্যারান্টি নষ্ট হয়ে যাবে।

২. আধ্যাত্বিকতার শ্রেষ্ঠত্ব ও মর্যাদা ক্ষুন্ন হবে।

ঠ. এই জন্য বড় একটি দল তৃতীয় একটি পথ অবলম্বন করে

১. আমােেদর দাওয়াত ও আন্দোলনকে ভুল বলতে পারে না

২. সত্যতা স্বীকার করলেও মুলনীতিকে বাদ দিয়ে বিশেষ কোন ব্যক্তির বিষোদাগার করে ঘোলাটে করে আন্দোলন থেকে দূরে সরে থাকে।

ড. পরিণামঃ তারা যুক্তি দিয়ে মানুষের মুখ বন্ধ করার চেষ্টা করলেও খোদার মুখ বন্ধ করতে পারবে না।

আমাদের কর্মনীতি

ক. আমাদের কর্র্মনীতির উৎস 

১. কুরআন 

২. হাদিস এবং 

৩. নবী-রাসুলদের কর্মনীতি

খ. যারা দাওয়াত গ্রহণ করে তাদের প্রতি কর্মনীতি/আহবান

১. খোদার দাসত্ব অনুযায়ী জীবন গড়ে তুলতে বলি।

২. কাজে নিজের ঐকান্তিকতার পরিচয় দিতে বলি।

৩. ঈমানের বিপরীত কাজ হতে নিজকে পবিত্র রাখতে বলি।    

গ. আন্দোলনে যোগ দিয়ে যে কর্মনীতি ত্যাগ করতে হবে

১. বড় হওয়ার লক্ষ্যে উচ্চ শিক্ষা গ্রহণ করেতাদের গগণচুম্বি স্বপ্ন-প্রাসাদ ধুলিস্যাৎ করতে হয়।

২. অবৈধ পথে অর্জন করা ধন-সম্পদ ত্যাগ করে সর্বহারা হতে হয়।

৩. জীবিকা নির্বাহের শরীয়ত বিরোধী পথ ত্যাগ ও পবিত্র পন্থা গ্রহণ করাতা যতই নিকৃষ্ট হোক।

ঘ. উপরোক্ত কর্মনীতিতে আল্লাহর পক্ষ থেকে প্রাথমিক যে অগ্নি পরীক্ষা/বাঁধা/সমস্যা আসে

১. প্রথমে পিতা-মাতা ও নিকট আত্বীয় স্বজনতার ঈমানের সাথে দ্বন্ধে লিপ্ত হয়।

২. অনেক মানুষের মায়া মুহাব¦ত ও স্নেহ নীড় বোলতার বাসায় পরিণত হয়।

ঙ. প্রাথমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের মধ্যে যে তাকওয়ার সৃষ্টি হয়

১. যে তাকওয়া ফিকাহ শাস্ত্রের মান দন্ডের উত্তীর্ণ নয়।

২. যে তাকওয়া খানকা শরীফের মানদন্ডে অসম্পূর্ণ।

৩. কিন্তু সে তাকওয়া বিশ্ব পরিচালনার গুরু দায়িত্ব ও আমানাতের দুর্বহ ভার বহন করার মত।

৪. খানকার তাকওয়া একশত ভাগের একভাগও বহন করার মত নয়।

চ. দ্বিতীয় দায়িত্ব-

নিকটবর্তী পরিবেশে সকল লোকদের মধ্যে দাওয়াত বিকীর্ণ করা।

ছ. দাওয়াতের ফলাফল বা লাভ ২টি

১. দাওয়াতের মাধ্যমে জীবনে ঈমান বিরোধী ভুলত্রুটি থেকে পরিশুদ্ধ করার অবকাশ পায়।

২. দাওয়াতের ফলে নিজের মধ্যে অনেক গুণ বৈশিষ্ট্যের সৃষ্টি হয়।

জ. যে সব দিক হতে বিপদ/সমস্যা আসতে পারে

১. প্রথমে হতাশা ব্যাঞ্জক অবস্থার সৃষ্টি হয়।

২. অপমানকর উক্তি ও ভর্ৎসনা করা।

৩. মুর্খতা মুলক কার্য দ্বারা অসম্মান করা।

৪. নানা প্রকার অভিযোগ ও দোষারোপ করা।

৫. ফেতনায় জড়ানোর উপায় অবলম্বন করা।

৬. ঘর হতে বিতাড়িত করা ও আতœীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন করা।

৭. তার জীবন দুর্বিসহ করা।

ঝ. এ সব বিপদ মসিবতে কর্মীর মধ্যে যে গুণ-বৈশিষ্ট্যের বিকাশ ও উৎকর্ষ সাধিত হয়

১. সাহস হারা হয়ে সত্যের আন্দোলন থেকে বিরত থাকে না।

২. বাতিলের সামনে আতœসমর্পন করে না।

৩. বিক্ষুদ্ধ হয়ে বিবেক-বুদ্ধি হারায় না।

৪. বৈজ্ঞানিক কর্মপন্থাবুদ্ধিমত্তানমনীয় দৃঢ়তাস্থিরতাসততাপরহেজগারীর অধিকারী  হওয়া

৫. একনিষ্ঠ মন নিয়ে নিজ আদর্শের উপর অটল অবিচল থাকে।

৬. পরিবেশকে অনুকুল করার অবিশ্রান্ত চেষ্টা চালায়।

ঞ. আদর্শ প্রচারে কুরআনে উপস্থাপিত কর্মীর কর্মনীতি

১. উত্তম উপদেশের মাধ্যমে দাওয়াত উপস্থাপন করা।

২. স্বাভাবিক পদ্ধতিতে দ্বীনের মুলনীতির ভিত্তিতে বাস্তব জীবনের দাওয়াত পেশ করা।

৩. সাধ্যাতীত খোরাক দান না করা।

৪. খুটিনাটি বিষয় পেশ না করা ও অবৈজ্ঞানিক কাজ করতে নিষেধ করা।

৫. মৌলিক দোষ-ত্রুটি দুর করার আগে বাহ্যিক দোষ-ত্রুটি দুর করার চেষ্টা করা।

৬. অবজ্ঞা মিশ্রিত ব্যবহার না করা।

৭. মন্দের বিপরীতে উত্তম ব্যবহার।

৮. অত্যাচার ও নিপীড়নের ফলে ধৈর্য্য ধারণ করা।

৯. অর্থহীন কথাবার্তা উপেক্ষা করা।

ট. যে কর্মনীতির আলোকে লোকদেরকে আন্দোলনে টানা যায়

১. রিয়া ও প্রদর্শন মুলক কাজ হতে বিরত থাকা।

২. নিজেদের কীর্তি-কলাপ গৌরবের সহিত লোকদের সামনে পেশ না করা।

৩. সকল কাজ আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য করা ও তার কাছে ফলাফল আশা করা।

৪. মনের মধ্যে সর্বদা আল্লাহর ভয় থাকা।

৫. তড়িৎ ফলাফল না আসলে কৃত্রিম ও প্রদর্শন মুলক কর্মনীতি গ্রহণ না করা।

ঠ. আমাদের রাজনৈতিক কর্মনীতি

১. বাতিল শাসন ব্যবস্থার আইন-আদালতের সাহায্য গ্রহণ করবো না।

২. জান-মাল ও ইজ্জত-সম্মান রক্ষার জন্য বাতিল রাষ্ট্র ব্যবস্থার সাহায্য গ্রহণ করবো না।

৩. যারা এই সীমা লংঘন করবে তাদের জামায়াতের মধ্যে থাকতে দেয়া হবে না।

৪. যারা স্বার্থের-আত্মীয়তা রক্ষার জন্য মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে পড়ে জামায়াতে তার স্থান নেই।

ড. আমাদের কর্মনীতির যুক্তিকতা ও স্বার্থকতা ৪টি

§ প্রথমতঃ আমরা একটি আদর্শবাদী জামায়াত কিনা তা প্রমাণ করা যায়।

§ দ্বিতীয়তঃ সদস্যদের বিশ্বস্ততা প্রমাণ করার সন্দেহাতীত মানদন্ড।

§ তৃতীয়তঃ সদস্যরা আইনের পরিবর্তে নীতি-নৈতিকতার ভিত্তিতে সমাজের সাথে সম্পর্ক করবে।

§ চতুর্থতঃ সমাজে নৈতিক ও বাস্তব অবস্থা উলংগ করে দেখা সম্ভব হয়। ধর্মের আবরণে লুকায়িতদের চরিত্র ফুটে উঠবে।

ঢ. শেষকথাঃ

আমাদের কর্মনীতিকে যাচাই করার আহবান

১. আমাদের কর্মনীতি কি ধরনের,

২. মানুষকে কোন দিকে ডাকছি এবং সেই দাওয়াত কতখানি সত্য,

৩. কুরআন ও হাদিসের সাথে সামঞ্জস্য আছে কি না,

৪. বর্তমান সমাজের রোগ প্রতিষেধক হিসাবে বাতিল মতবাদ নির্মূল করার মত কি না।

আলেম ও পীর সাহেবদের দোহাই

ক. আলেম ও পীর সাহেবদের প্রতি প্রশ্ন/ জিজ্ঞাসা

১. বড় আলিম ও পীর সাহেবরা কি দ্বীন সম্পর্কে পরিপূর্ণ ওয়াকিফহাল নহেন ?

২. জামায়াত ইসলামের যে রূপ প্রচার করে থাকেতারা কি তা বুঝতে পারে নাই।

৩. তাদেরকে বার বার বলা সত্ত্বেও তারা সহযোগিতা করতে প্রস্তুত নহে-তার কারণ কি।    

খ. এই প্রশ্নের উত্তর

১. আমি (মওদুদী) দ্বীন-ইসলামকে বর্তমান ও অতীত ব্যক্তিদের থেকে বুঝতে চেষ্টা করি নাই।

২. ইসলামকে কুরআন ও রাসুলের সুন্নাহ থেকে বুঝার চেষ্টা করেছি।

৩. দ্বীন আমার ও ইমানদারের নিকট কী দাবী করেতা জানার জন্য কোন বুজুর্গ ব্যক্তি কি করেন/বলেন-সে দিকে ভ্রুক্ষেপ করি নাই।

৪. বরং আমি এক্ষেত্রে কুরআন ও নবী-রাসুলের কর্মনীতি বুঝার চেষ্টা করেছি।

গ. আলিম ও পীর সাহেবদের প্রতি আমার আহবান

১. গৃহীত কর্মনীতি কুরআনের নির্দেশ ও নবীদের কার্যকলাপ হতে প্রমানিত হয় কিনানিরপেক্ষ দৃষ্টিতে তা বিচার করুন।

২. আপনারা কুরআন ও সুন্নাহ হতে জ্ঞান লাভ করতে প্রস্তুত থাকুন।

৩. আপনারা আমার দাওয়াত গ্রহণ করে আমার সাথে মিলিত হোন।

৪. আমাদের দাওয়াতে কুরআন-সুন্নাহর বিপরীত কিছু থাকলে তা প্রমাণিত করুন।

৫. কুরআন-সুন্নাহ হতে সরে গেছি প্রমাণিত হলে সত্য গ্রহণে মুহুর্ত বিলম্ব করব না।

৬. কিন্তু হক ও বাতিলের প্রমাণ করার জন্য যদি কুরআনসুন্নাহ ব্যাতীত ব্যক্তি বিশেষের উপর নির্ভর করেনতা আপনাদের ইচ্ছাধীন।

দরবেশীয় বিদ্রুপ

ক. অনেকের অভিযোগ হলো

১. জামায়াতে ইসলামী কতগুলো দরবেশ ও দুনিয়া ত্যাগী লোকদের দল।

২. পৃথিবীর বাস্তবতা ও রাজনীতি থেকে তারা অনেক দূরে।

৩. মুসলমানদের বর্তমান সংকটপূর্ণ সময়ে সম্মুখে অগ্রসর হওয়ার চিন্তা তাদের নাই।

৪. যাদের বাস্তব জীবনের সমস্যার দিকে নজর বেশীতারা এ আন্দোলনে যোগদিতে পারে না

খ. তাদের প্রতি উত্তর হল

§ বর্তমান রাজনীতিবীদরা স্থুলদৃষ্টি নিয়ে মাঠে নেমেছেন।

§ তারা শুধু রাজনৈতিক সমস্যা ও বাহ্যিক রদ-বদলকেই  গুরুত্বপূর্ণ মনে করে।

§ কিন্তু রাজনীতির প্রাসাদ যে ভিত্তির উপর স্থাপিততাতে তাদের দৃষ্টি এখনো পৌছে নাই।

গ. বর্তমান (ভারতের) রাজনৈতিক সমস্যা জটিল আকার ধারণ করার কারণ হচ্ছে

১. সমাজের নৈতিক চরিত্রবিশ্বাসতাহযীব যে ভিত্তির উপর স্থাপিত ছিল তা দুর্বল হয়ে পড়ে পথভ্রষ্ট ইঙরেজ্ ১টি জাতি (ইংরেজরা) সহস্র মাইল দূর থেকে এসে দেশকে পরাভূত করে।

২. মুসলমানদের এই পরাধীনতা ও দূর্বলতার সুযোগে তাদের প্রতিবেশী জাতি শক্তিশালী হয়ে তাদের বিরুদ্ধে শত্রুতা আরম্ভ করে। > তাই ঘরের শত্রুও বাইরের শত্রুকে মুকাবেলা করা জটিল হয়ে পড়ে।

ঘ. বর্তমান বিশ্বব্যাপী বিপর্যয়ের কারণ

১. নিজেদের নৈতিকতাতাহযীবঅর্থনীতিরাজনীতির ভিত্তি রেখেছে খোদাদ্রোহী শক্তির উপর

২. ফাসেকী ও কুফুরী ব্যবস্থার বাহ্যিক রূপ পরিবর্তন করার চেষ্টা করা হচ্ছে।

৩. আমার (মওদুদী) দৃষ্টিতে-মুলতঃ ইসলামের দৃষ্টিতে এই রাজনীতি একেবারেই অর্থহীন।

ঙ. বর্তমান বিশ্ব মুসলিমের সমস্যা-জটিলতার সমাধান হচ্ছে

১. তার বিধানকে নিজেদের জীবন ব্যবস্থা হিসাবে গ্রহণ করা।

২. পৃথিবীর কর্তৃত্ব খোদাদ্রোহীকাফিরফাসিকদের থেকে নেকবান্দাদের হাতে তুলে দেয়া।

৩. সকলে মিলে খোদার দাসত্ব করা।

চ. আমরা কি রকম দল গঠন করতে চাই

১. যারা তাকওয়ার দিক থেকে সমাজের সাধারণ পরহেজগারদের তুলনায় শ্রেষ্ঠতর হবে।

২. বিশ্ব পরিচালনার যোগ্যতা-দক্ষতার দিক দিয়ে বর্তমান লোকদের থেকে বেশী অগ্রসর হবে

ছ. বর্তমানে পরহেজগারী মনে করা হয় ঘরের কোণায় বসে বাস্তব জগতের কাজ কর্মের সাথে সকল সম্পর্ক ছিন্ন করাকে।

জ. বিপর্যয় সংশোধনের উপায় হচ্ছে

১. খোদার নেক বান্দাদের একটি সুসংবদ্ধ জামায়াত গঠন।

২. দলের প্রত্যেকটি লোক খোদাভীরুন্যায়পন্থী ও বিশ্বাস ভাজন হবে।

৩. খোাদার মনোনীত চরিত্র ও গুণাবলীতে ভূষিত হবে।

৪. সে সংঙ্গে দুনিয়ার লোকদের পরাজিত করার মত বিশ্ব পরিচালনার যোগ্যতাও সর্বাধিক হবে >-  আমাদের দৃষ্টিতে ইহা অপেক্ষা বড় রাজনীতি আর হতে পারে না।

জামায়াতে ইসলামীর কর্মীদের প্রতি মাওলানা মওদুদীর উপদেশ

১. জেনে বুঝে আল্লাহর নিকট প্রতিশ্রুতি দিয়ে যে দায়িত্ব নিয়েছেনতা গভীরভাবে উপলব্ধি করুন এবং এই গুরু দায়িত্ব পালন করুন।

২. দ্বীনের গুরুত্বপূর্ণ বিষয় গুলো অনুধাবন করে খুটিনাটি বিষয় গুলো পরিত্যাগ করে চলুন।

৩. অনেক কর্মীরা আদর্শউদ্দেশ্য ও মতবাদ বুঝেছেকিন্তু কর্মনীতি আদৌ বুঝে নাই। তাই কর্মনীতিও ভালভাবে বুঝার চেষ্টা করুন।

৪. স্থুলদর্শিতাপ্রদর্শন মুলক মনোবৃত্তি এবং দ্রুত ফলাফল পাওয়ার মানসিকতা পরিহার করুন।

৫. দাওয়াত ও প্রচারণার ক্ষেত্রে নির্মমতা ও কঠোরতা পরিহার করে সহজ ও সরলভাবে যুক্তির মাধ্যমে দাওয়াত উপস্থাপন করুন।

 

সংগ্রহঃ ThinkpPadBD

 

ইসলামী দাওয়াত ও কর্মনীতি বইটি পিডিএফ পড়ার জন্য এখানে ক্লিক করুন। আর অডিও শোনার জন্য এখানে ক্লিক করুন।

উপরোক্ত নোটটি A4 সাইজে পিডিএফ ডাউনলোড করার জন্য এখানে ক্লিক করুন।

 

https://amarpriyobanglaboi.blogspot.com/p/blog-page_23.html

 

No comments:

Post a Comment

আমার প্রিয় বাংলা বই-এর যে কোন লেখাতে যে কোন ত্রুটি বা অসংগতি পরিলক্ষিত হলে দয়া করে আমাদের লিখুন।